• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৩ই কার্তিক ১৪৩২ রাত ১২:১৭:২৮ (29-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

এটুআই ডিজিটাল সেন্টার মানবকেন্দ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক: ফরাসি রাষ্ট্রদূত

 নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্রান্সের বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ-মার্ক সেরে-শারলে রংপুর সদরের সদ্য পুষ্করনী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পরিদর্শন করে এটুআই এর ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে “মানবকেন্দ্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষ” বলে প্রশংসা করেছেন।তিনি বলেন, “গ্রামীণ জনগণের কাছে সরকারি ও বেসরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার দারুণ একটি ব্যবস্থা ডিজিটাল সেন্টার। যা সামাজিক ন্যায়ের বাস্তব চর্চা। ফ্রান্স এমন উদ্যোগকে সমর্থন করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।”২৭ অক্টোবর সোমবার বিকেলে এ পরিদর্শন কর্মসূচিটি আয়োজন করে ইউএনডিপি বাংলাদেশ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। সহযোগিতায় ছিল এটুআই, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এতে শহরের ওয়ার্ড থেকে দূরবর্তী ইউনিয়ন সবখানেই কীভাবে ডিজিটাল সেন্টার সেবাপ্রাপ্তি বদলে দিচ্ছে, তার উদাহরণ উপস্থাপন করা হয়।  সদ্য পুষ্করনী ইউনিয়নের প্রশাসক এস. এম. আইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় সেবা গ্রহীতা এবং ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের সাথে ইন্টারেক্টিভ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার বলেন, “ডিজিটাল সেন্টার নাগরিককে শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রে এনেছে। প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সারাদেশে ডিজিটাল প্রবেশগম্যতা ও স্থানীয় উদ্যোক্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সময়, ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে, জনসেবায় আস্থা বাড়ছে।উচ্চপর্যায়ের এই প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন- এ কে এম সোহেল, জাতিসংঘের ইউনিটপ্রধান (অতিরিক্ত সচিব), ইআরডি; সোনালী দয়ারত্নে, ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনডিপি বাংলাদেশ; আনোয়ারুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনডিপি বাংলাদেশ; মোহাম্মদ সফিউল আযম, হেড অব কমিউনিকেশনস, এটুআই; অশোক বিশ্বাস, লিড, ডিজিটাল সেন্টার, এটুআই; এবং মো. আবদুল কাইউম, হেড অব কমিউনিকেশনস, ইউএনডিপি বাংলাদেশসহ প্রধান উপদেষ্টার কারর্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিনিধিগণ। সার্বিকভাবে সমন্বয় করেন, রংপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম।পরিদর্শনকালে ডিজিটাল সেন্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আরিফুজ্জামান মুন তাৎক্ষণিক সেবা প্রদান প্রক্রিয়া প্রদর্শন করেন এবং সেবাগ্রহিতাদের সেবা প্রদান করেন। এর মধ্যে ছিল এজেন্ট ব্যাংকিং, সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, হজ নিবন্ধন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, টিআইএন, ভূমিসংক্রান্ত সেবা ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কার্ড প্রদান।সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে গয়না বালা যিনি একজন প্রতিবন্ধী নাগরিক, বলেন, “আগে ছোটোখাটো ব্যাংকিংয়ের জন্যও অন্যের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখানে সেবাদাতারা সম্মানের সঙ্গে দিকনির্দেশনা দেন, কয়েক মিনিটেই কাজ হয়ে যায়। শহরে যেতে হয় না। মর্যাদা ও স্বনির্ভরতা দুটোই পেয়েছি।” আরেক সেবাগ্রহীতা মো. রফিকুল ইসলাম সেদিনই হজ নিবন্ধন সম্পন্ন করেন, মো. কিবরিয়া একাধিক সেবা একসাথে নেন। অনুষ্ঠানে সেন্টারের অগ্রগতির উপস্থাপনা, সেবাগ্রহীতা–জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।এটুআইয়ের ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোগটি ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র হিসেবে শুরু হয়ে পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন ওয়ার্ডে সম্প্রসারিত হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশজুড়ে ৯,৫০০টির বেশি সেন্টার স্থাপিত হয়েছে এবং নিয়মিত নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতে গ্রাম পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার সম্প্রসারণ করা হবে।আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ৪,৮০০-এর বেশি সেন্টারে এজেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিং চালু রয়েছে। একসেবা উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তারা ৩৯০-এর বেশি সেবা যেমন ভূমি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ইউটিলিটি, লাইসেন্সিং, ভ্রমণ ও নিবন্ধন সেবা দিচ্ছেন। প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাসী হেল্প ডেস্ক সক্রিয় রয়েছে।ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য চালু রয়েছে সিএমএসএমই ওয়ান স্টপ সার্ভিস পয়েন্ট। পাশাপাশি স্কিলস ফিউশন সেন্টারে কম্পিউটার, আইসিটি ও ট্রেড কোর্সে তরুণদের দক্ষতা ও কর্ম সংযোগ তৈরি হচ্ছে। এ সাফল্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি ফিলিপাইনের বঙ্গসামোরো অঞ্চলে ডিজিটাল সেন্টার মডেলটি অনুকরণ করা হয়েছে।