মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার পৌরসভা এলাকায় হঠাৎ করে দোকানে মাসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিল বিতরণকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা, বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কোনো দোকানিকে ২০০ টাকা, আবার কাউকে ৫০০ টাকা বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ, মাইকিং কিংবা লিখিত ঘোষণা ছাড়াই এমন বিল হাতে পেয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।


বিলগুলো পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অধিকাংশ বিলে উপরে ‘মণিরামপুর পৌরসভা কার্যালয়’ লেখা থাকলেও নিচে থাকা ‘মাসিক পানি বিল’ শব্দ কেটে সেখানে ‘মাসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিল’ লেখা হয়েছে। কোনো বিলে এই লেখা সিল মারা, আবার কোনো বিলে হাতে লেখা। আরও লক্ষ করা যায়, কিছু বিলে ‘কৃষ্ণ দেবনাথ, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, আইস ব্রেকস লিমিটেড, মণিরামপুর পৌরসভা, মণিরামপুর, যশোর’ নামের সিল থাকলেও অনেক বিলে কোনো সিল বা স্বাক্ষর নেই। এতে বিলগুলোর বৈধতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
হঠাৎ করে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিলকে ঘিরে মণিরামপুর বাজারসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা দ্রুত প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা, লিখিত নির্দেশনা এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার দাবি জানিয়েছেন, যাতে সাধারণ দোকানিরা কোনো ধরনের হয়রানি বা অযৌক্তিক আর্থিক চাপের মুখে না পড়েন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, এর আগে কখনো পৌরসভা এ ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিল আদায় করেনি। বাজারের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের দোকানের ময়লা আমরা নিজেরাই ঝাঁড়ু দিয়ে পরিষ্কার করি। পৌরসভার কেউ এসে ময়লা নেয় না। তাহলে এই বিল কীসের? আরেক দোকানি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাসে ৫০০ টাকা দিলে আমাদের লাভই থাকবে না। এটা আমাদের কাছে চাঁদাবাজির মতো মনে হচ্ছে। অনেক দোকানি অভিযোগ করেন, কোনো নোটিশ, মাইকিং কিংবা লিখিত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই হঠাৎ করে এই বিল দেওয়া হয়েছে। এতে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ বলেন, বিল পরিশোধ না করলে ভবিষ্যতে হয়রানির শিকার হতে হবে কি না এই আশঙ্কায় তারা ভীত।
এ বিষয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপক কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরি ভাগ করে বজ্য বিল নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্য ৫০ জন দোকানীকে বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা বিলের কাগজ পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল সবাইকে মাইকিং করে অবহিত করা হবে। পৌরসভার দোকানী ও বাসা-বাড়ীর দুই হাজার গ্রাহককে এই বিলের আওতায় আনা হয়েছে। শীগ্রই বজ্য বিলের আওতায় থাকা প্রত্যেক গ্রাহকে বিল পাঠানো হবে।
মণিরামপুর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তফিকুল আলম বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিল সম্পর্কিত বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে বলেন।
মণিরামপুর পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী উত্তম মজুমদার বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আইস ব্রেকস লি. কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিল সংক্রান্ত ব্যপারে শীগ্রই বাজারে মাইকিং করে প্রাচার ও প্রচারণা করা হবে। এসব বিষয়ে ওয়ার্ড কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সম্রাট হোসেন বলেন, আমিতো নতুন আসছি এ বিষয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখি কিন্তু পৌরসভার নামে সই ছাড়া কোনো বিল দেওয়ার কথা না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available